লিলিয়ানা

Posted: ডিসেম্বর ১১, ২০২০
Category: গল্প
By:


আনোয়ারের বোনের কাছে আমি প্রথম যেদিন যাই মনে আছে পৃথিবীতে সবাই ঘুমায়ে ছিলো। ঘরবাড়ি সব পাতালে ডুবে ছিলো। চারদিকে চিরকাল যেন সবুজ মাঠ আর সেই মাঠের মাঝখানে একটা কাঠের টেবিল। সেই টেবিলের দুদিকে দুজন বসে আছি। আনোয়ারের বোন অংক বই বের করে বলে আমার অংকেই যত সমস্যা স্যার অন্য সাব্জেক্টে তো ভালোই মার্কস পাই। আমি ভাবি তাকে স্যার ডাকতে মানা করি। আবার ভাবি, থাক, যা খুশি ডাকুক। বা, আমি টের পাই— ও মাগো একি কাণ্ড! বোবা হয়ে গেছি কথা বলতে পারি না। এই চেয়ার থেকে উঠে সবুজ মাঠের যেকোনো একদিক দৌড়ে যেতে পারি না। কেবল বসে থাকি আর আনোয়ারের বোন বলতে থাকে স্যার আমি কিছুতেই বীজগনিতের সুত্র মনে রাখতে পারি না। বা, সে বলে পীথাগোরাস কে ছিলো জানেন আপনি? বা, লম্ব অতিভুজ ভূমি সব কেন জট পাকিয়ে আসে আর মনে হয় সবকিছু এক। বা, সে বলে, বলতে থাকে, আরো অনেক কথা। আমার মনে হয়, আমি ধীরে ধীরে কানেও শুনতে পাই না। এই সবুজ মাঠের বুকে কান পেতে থাকলেও ঘাসের শ্বাস শুনতে পাবো না কোনোদিনও আর কেবল দেখতে পাই আনোয়ারের বোন মুখ নাড়ছে তার মুখ নাড়া দেখে আমি বুঝতে পারি বা বোঝার চেষ্টা করি মনে হয় সে এখন বলল স্যার আমি মিডল টার্ম ব্রেক ও পারিনা আর তখন আনোয়ার আসে আমরা দেখতে পাই আনোয়ার যেমন ব্যস্ত ভঙ্গিতে এই সবুজ মাঠের মাঝে মানে তার বোনের রুমে প্রবেশ করে তার ও অধিক ব্যস্ত ভঙ্গিতে বলা শুরু করে " দোস্ত ভালো মত পড়াইস, খুবই ইন্টেলিজেন্ট মেয়ে, কয়দিন পড়াইলেই বুঝবি " আমি কিছু শুনিনা কারন আমি ততক্ষনে কালা হয়ে গেছি তবুও আনোয়ার'র এর ব্যস্ত মুখ নাড়ার উত্তরে কিছু বলা দরকার তবু আমি কিছু বলিনা বা বলতে পারিনা কারন আমি বোবা, আমি কেবল দেখি আনোয়ারের বোন মাথা নিচু করে আছে যেন এই সবুজ মাঠে আমি আর সে বাদে অন্যকিছু অন্যকেউ আসায় সে মহাবিরক্ত বা এসব কিছুইনা ইন্টেলিজেন্ট শব্দটা শুনলে মাথা নিচু করে লজ্জা পেতে হয় বা ভান করতে হয় তা সে জানে আর আমি তাকে আবিস্কার করতে থাকি একের পর এক নতুন রুপে আবার ভাবি গতকাল'কে অব্দিও আমি তার চেহারা দেখিনি আনোয়ার আমার বন্ধু আমারই মত এই শহরে সেও একা থাকে তার পরিবারের কথা উঠলে যদিও বারবার তার এই বোনের  কথা আমি শুনেছি কিন্তু সামনা সামনি দেখলাম এই আজকে , গত মাস কয়েক ধরেই আনোয়ার আমাদের সবাইকে বা আমাকেই বারবার বলে তার বাবা মা চায় মেয়ে'কে বিয়ে দিয়ে ঝামেলা কমাতে আনোয়ার বলে না এত জলদি কিসের বিয়ে ওর এখনই বিয়ে করতে হবেনা ওকে আমি ঢাকা নিয়ে আসবো ও আমার সাথে থাকবো এখানে থেকে পড়ুক ছোট শহর থেকে বেরিয়ে ঢাকা শহরে এলে বিয়ে সাদীর চিন্তা নিশ্চয়ই তার মাথা থেকে বেরিয়ে যাবে আনোয়ারের মুখেই এসব শুনি আমি আনোয়ার বলে ও যখন ঢাকা আসবে তুই কিন্তু ওরে অংক করাবি, আমি বলামাত্রই বিপদগ্রস্থ অনুভব করি, ভাবি কাজ হইছে, বন্ধুবান্ধবের বোন'কে পড়ানো মানে মাস হইয়া গেলে টাকা যদি দিতেও দেরী কর কোনোভাবেই তা চাওয়া যাবেনা তখন আমার মনে হবে ধুরহ কেন যে পড়াই তখন আমার মনে হবে নাহ আর পড়াবোইনা বা আনোয়ার'কে আমার বিরক্ত লাগবে সব অংক ভুলে যেতে থাকবো আনোয়ারের বোন কিছু জিজ্ঞাসা করলে বলবো আমি কিছু পারিনা তুমি আমাকে বুঝাইয়া দাও আমাকে এবার তুমি পড়াও ভালোমতো পড়াও আমাকে অংকে হাফেজ বানাইয়া দাও আনোয়ারের বোন। তবুও আমি আনোয়ার'কে কিছুই বুঝতে দেইনা আমি বলি হ ভাই এই বয়সেই কিসের বিয়া, ওরে তুই ঢাকা লইয়া আয়, হাজার দশকের মধ্যে দুজনের লইগা একটা বাসা দেখ, তুইতো ২০ হাজার বেতন পাস ই, চইলা যাবে দুজনের, পারবিনা নাকি? আনোয়ার বলে, বিয়া আমি কিছুতেই দেতে দেবোনা, এই বয়সে বিয়া কইরা জীবনটা গোল্লায় দেতে দেওয়া যায়না। আমি তালে তাল মিলাই বলি, হ গোল্লায় দেতে দেওয়া যায়না আর মনে মনে বলি ওরে আনোয়ার আমরা সবাই দলবল নিয়া ব্যাগ বোচকা নিয়া গোল্লার দিকে যাত্রা করেছি বহুকাল, আর এখন প্রায় গোল্লার কাছে চলে আসছি, আমাগো খবর শেষ, তুমি সোনা কিছুই টের পাওনা, পাবা পাবা টের পাবা।

আর একদিন সকালে আনোয়ার আমাকে জানায় সে তার বোন'কে নিয়া আসছে দুই চারদিনেই সব গুছগাছ কইরা ফেলবে, নতুন বাসা নিছে নয়াটোলা চেয়ারম্যান গলি, আমি যেন দুইএকদিনে ফোন কইরা তার বাসায় যাই। আমি আবারো বিপদগ্রস্থ অনুভব করি আসলেই আনোয়ার গোল্লায় গেছে সে একাই চলতে হিমশিম খায় থাকে দশবারোজন মিলে মেসবাড়িতে সে কিভাবে এখন বাসা বাড়ি ভাড়া নিয়ে দুজন মানুষের খরচ চালিয়ে এই ঢাকা শহরে টিকে থাকবে বা আমি এসব কিছুই ভাবিনা আমি ভাবতে থাকি আনোয়ার কি জানে মাসে আমি কত টাকা নেই, সে যদি কম দেয়, বা আদৌ না দেয় যদি মাসের শেষের দিকে সে বলে বন্ধু রাগ হইস না খুবই টানাটানি বাজারঘাট ও হইতেছেনা তোর টাকাটা কয়দিন পর নিস মনে কইরা তখন উত্তরে আমি কি বলবো, আরেহ ঠিক আছে টাকা নিয়া ভাবিস না, টাকা পয়সা কোনো ব্যপার না নাকি বলবো আমার ও খুব ঝামেলা তুই যেমনে পারো আমার টাকা দে দুই একদিনে ভাই বা এসব কিছুইনা আমি ভাবি যা ভাবিনি কখনো আগে এমন কিছু দৃশ্য শীতের সিড়ি বা আনিকার চোখের কাছে একা একা মনে হয় কিছু নেই কিছু নেই কোথাও বা আমার ক্লান্ত লাগে আমি বিছানা ছেড়ে উঠি আর বলতে থাকি বিপদ আমার পিছন ছাড়লোনা অথচ আনিকা অসম্ভব ভালোবাসার কথা বলে দুইমাসেই আমাকে ছেড়ে গেলো কিযে মুসিবত এইসব হিসাব নিকাশ বুঝিনা আর না বুঝতে বুঝতেই আমার দিন কাটে আর একদিন চক্ষুলজ্জায় নাকি কোনো কাজ না থাকায় নাকি আনোয়ারের কথা রাখতে আমি ফোন করি, রওনা দেই তাদের বাসার দিকে আর  তার মিনিট চল্লিশ বাদে  প্রথমবারের মত দেখি আনোয়ারের বোন'কে, সে দরজা খুলে দেয়, আমি দেখি চারপাশে উদ্যান বিকশিত কমল..বা মধ্যযুগের কাব্য মুহাম্মদ জীবন বলে উদ্যান হেরিয়া ভ্রমি মনের উল্লাস পুস্প গন্ধে বৃক্ষ ভেদি চন্দন সুবাস.. বা এসব কিছুইনা, আনোয়ারের বোন দরজা খুলে বলে, আসলামু আলাইকুম, ভিতরে আসেন...

বিপদ কখনো একা আসেনা দলবল নিয়ে আসে এই প্রবাদ বিখ্যাত কারো হতে পারে আমি তার নাম জানিনা আমার মনে পরে মা বারবার এই কথা বলতো আর আমরা ভাইবোনেরা সবাই একটা বিপদের কথা শুনেই পরবর্তী বিপদের জন্য অপেক্ষা করতাম কিন্তু প্রায়ই দেখতাম বিপদ একাই এসেছে দলবল নাই সাথে তখন আমরা সবাই মিলে মা'কে জিজ্ঞেস করতাম মা বিপদের দলবল কই, সে একা কেনো, আর কি বিপদ আসবেনা?  আমাদের এইযে অপেক্ষা তার কি হবে? আমরা সবাই দেখতে পেতাম বিপদের এমন একা আসাতে মা সাংঘাতিক লজ্জা পেতো, মায়ের লজ্জা পাওয়া দেখে আমরা চুপ করে যেতাম আর একা আসা বিপদ'কে দুঃখের সাথে মোকাবিলা করতাম আর বিপদের গায়ে হাত বুলিয়ে বলতাম পরেরবার আর একা আসিস না ভাই আমাদের মা লজ্জা পায়, আমাদের কষ্ট হয়, সত্যিই মা যদি এখন থাকতো আমার পাশে মা আনন্দ পেতো ভুলে যেতো যত সব লজ্জা সে জীবনে পেয়েছে  কারন তার ছেলের ঘাড়ে এবার বিপদ একা আসেনাই দলবল নিয়ে এসেছে আর সেই দলবল নিয়ে এসেছো আরো অনেক দলবল পাড়া প্রতিবেশী মহল্লা জেলা মহকুমা আরো অনেক অনেক বিপদ। কারন এখন সপ্তাহে চারদিন আনোয়ার এর বোন'কে কেবল পড়ালেই হবেনা যেহেতু সে ঢাকা শহরে নতুন আর তার ভাই অফিস নিয়ে ব্যস্ত যদি কোনো প্রয়োজন হয় বিপদ আপদ হয় বা কোথাও যেতে হয় সে আমাকে কল দিলে যেন আমি তার সাথে যাই কেননা আমিতো আর আনোয়ারের মত চাকরি করিনা, আমার কোনো কাজ নাই, আমার কাজ ছিলো আনিকা'কে ভালোবাসা সে চাকরি আমার চলে গেছে এখন আমি বেকার এখন আমাকে আনোয়ার কেনো যেকেউ বলতে পারে বাজারের ব্যগট বসে বসে সেলাই কর হারামজাদা আর আমিও বলি কোন কালারের সুতা দিয়া সেলাই করা যায় বলেন তো বা এসব কিছুইনা আনোয়ার আমাকে অনেক কাছের মানুষ ভাবে, তাই বিশ্বাস করে ভরসা করেই এসব দায়িত্ব দেয় বা আনোয়ার ও অন্যকিছু ভাবে যেমন আমি ভাবি আর এভাবেই এখন আমি রোজ আনোয়ারের বাসায় যাই আনোয়ার তখন হয়তো মাত্র অফিস থেকে ফিরেছে বা ফেরেনি আমি তার বোন'কে পড়াতে থাকি রুট টু একটি অমুলদ সংখ্যা না মুলদ সংখ্যা যা কিছুই হতে পারে বা আমি তাকে পড়াতে পারিনা মাথা নিচু করে তার ফর্সা পায়ের দিকে তাকিয়ে থাকি বা আমি খুব তোরজোর করে পড়াই ধমক দেই লিলিয়ানা তুমি খালি হাসবানা, এদিকে তাকাও, খাতার দিকে তাকাও, আর সে মানে আনোয়ারের বোন মানে লিলিয়ানা ফের বন্য হাসিতে ভেঙে পরে আমি টের পাই যা হবার হয়ে গেছে আমার কাজ সারা ধীর স্থির লিলিয়ানা নামের মরীচিকার পিছনে আমি ছুটে চলেছি যার ভবিষ্যৎ অজানার থেকেও অজানা বা লিলিয়ানা আনোয়ারের বোন হওয়ায় শক্ত যে তীরে দাড়িয়ে আছে আমি কোনোমতে এক স্পীড বোট ভাড়া করে তিরতির করে সেই তীরের দিকে চলেছি। মাঝে মধ্যে ছুটি মেলে, আমার কোথাও যেতে হয়না, আনোয়ারের বোনের কাছে না, অন্য টিউশনিতেও না, আমি ভাবি আজ আরাম করে সারাদিন ঘুমাবো, একটা পেইস টু খেলেই সারাদিন শেষ, দুপুরে খাওয়ার ঝামেলাও নাই বা অনেক অনেক স্বপ্ন দেখবো এই ভেবে ভেবে অনেক ঘুমের লোভে একটার জাগায় দুইটা মানে ৪ মিলিগ্রাম ঘুমের ওষুধ খেয়ে কেবল শুয়েছি আর আনোয়ারের বোন আমাদের লিলিয়ানা যার কানের লতিতে আমার হৃদয়ের জল সবসময় আটকে আছে বা সপ্তাহখানেক থাকবে এমন কিছু সেই লিলিয়ানা ফোন করে আর বলে " স্যার আমি একটু বাইরে যাবো, ভাইয়া বললো আপনি যেনো সাথে যান"আমি বলি কোথায় যাবা শুক্রবার দিনে! কি দরকার? সে বলে আপনে যাবেন কি যাবেন না?আমি বলি যাবো.. তুমি রেডি থাকো আমি তোমাদের বাসায় আসতেছি। বাসা থেকে বের হয়ে একটা সিগারেট ধরিয়ে চেয়ারম্যান গলির দিকে যেতে যেতে ঘুমে ঢলে পরে যাচ্ছিলাম বা মনে হলো দুই বছর ২ মাস আগে আনোয়ারের বোন আমাদের লিলিয়ানা ফোন করে বলেছিলো সে বাইরে যাবে আমি সেই দুইবছর ধরেই হাটছি, আরো হাজার বছর হেটেও আমি হয়তো যেতে পারবোনা রাস্তা জুড়ে অসংখ্য ফ্যান ঘুরছে সেসব ফ্যানের রেগুলেটর কে যেন কমিয়ে রেখেছে আল্লাহর দুনিয়ায় এত বান্দা এত বান্দা একেক বান্দার হাজার রকম আকাম আর আমিও তাদের একজন আমার সিগারেট দুই বছর ধরে জ্বলছে আর আরো কয়েক হাজার বছর পরে চেয়ারম্যান গলি'র আনোয়ারের বাসায় কলিংবেলে চাপ দেই বা চাপ দেবার আগেই আমাদের লিলিয়ানা এসে দরজা খুলে দেয় সাবানের ফেনাতে যেন সারাঘর ভরে আছে আর লিলিয়ানা বলে চলেন আমি রেডি আমি বলি চলো আর ওদিকে ঘুমে ভেঙেচুরে রাস্তায় পরে যাই যাই ভাব বা মনে মনে লিলিয়ানাকে বলি তুমি দুটি উলকাটা এনে ঠেকিয়ে দিলেই বুকের সবুজ পাটাতন বা বেবাক রঙের পাটাতন সরে যাবে, আমি দেখি লিলিয়ানা অনেক কিছুই পারে সে ঢাকা শহরে রিকশা কিভাবে ডাক দিতে হয় তাও জানে সে ডাক দেয় এই মামা যাবেন, ইস্কাটন রোড? রিকশায় উঠে আমি বলি সেখানে কি কাজ.. লিলিয়ানা বলে সারাদিন এমনিই বসে থাকবো আর রাত হলে পাউরুটি ভ্যান টহল দেবো জোস্নায়. আমি ভাবি আরেহ বাবাহ সে দেখি অনেক কথাও জানে আবার ভাবি জোস্না গভীর রাত আমি আর লিলিয়ানা দুজনে পাউরুটির ভ্যান নিয়ে ছুটেছি কি দারুন কি দারুণ...মেশিনের গন্ধ ভেসে আসছে আর আমার ঘুম এইসব দৃশ্য ভেবে আরো গভীর হচ্ছে.আমার ঘুম ভাঙে যখন দেখি আনোয়ার আমার পাশে বসে আছে বলে আমাদের  লিলিয়ানা পালিয়ে গেছে, আমার ঘোরের মত লাগে লিলিয়ানা কোথা থেকে পালালো নাকি আমি ঘুমিয়ে যাবার পর ইস্কাটনে ঘুমিয়ে যাবার পর বা আমি ভাবি সারা শহর যখন একদম ঘুম লিলিয়ানা আর সেই যুবক দুজন মিলে এখন জোস্নায় পাউরুটি ভ্যান টহল দিয়ে বেড়াচ্ছে, কি দারুণ কি দারুণ! 

আনোয়ারের জন্য দুঃখ হওয়া উচিত আমার, আপনার ও। আমাদের সবার৷ বোন'কে অল্প বয়সে বিয়ে দেবে না বিধায় নিয়ে এলো এতদুরে, এত অংক আমি করালাম, এত এত বড় সবুজ মাঠ সব ছেড়ে আনোয়ারের বোন আমাদের লিলিয়ানা চলে গেলো তার থেকেও বড় কথা সে যেতে পারলো! এসব ভাবতে ভাবতে বাসায় ফিরে আসি, পাশ কাটিয়ে এক হাজার স্কুটার চলে যায়, উফফফ কি শব্দ, বাসার দরজা খুলে বিছানায় চলে যাই, আর রুমমেটকে ঘোরের মাঝে বলি লিলিয়ানা মশারির দড়ি দুটি কোনাকুনি বেধে দিয়ে যাও। আমি শুতে যাবো লিলিয়ানা, মশারির ভেতর আমি হঠাৎ চলে যাওয়া মেয়েটির মত অস্থির হয়ে গেছি নিমজ্জনে এখন এই মশারিও কবরের মত লাগে দলা পাকানো কান্নাটা চোখ বেয়ে নেমে আসতেই আমি দৌড়ে বের হতে চাই কবর হতে বাথরুমের দিকে বন্য আক্রোশে ফুসতে থাকি বা বিড়বিড় করে বলি আমার লিলিয়ানা আমার লিলিয়ানা না না ওকে আমি ছাড়বোনা ওর দেহটা আমার চাই ওর পুরোটা আমার চাই বা এসব কিছুই না কবরের মাঝে শুয়ে থাকি। অর্থহীন শুয়ে থাকি কবরের বিছানায়, এই বুঝি ভালোবাসার উড়ান নিয়ে নামবে আনোয়ারের বোন, আমাদের লিলিয়ানা, না না আমার লিলিয়ানা...


মলয় দত্ত

কবি, গল্পকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা

শেয়ার করুন

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts

Begin typing your search term above and press enter to search. Press ESC to cancel.

Back To Top
error: Content is protected !!